লিবিয়ায় গুলিতে নিহতদের মধ্যে ভৈরবের ৫ জন

ইতালি যাওয়ার স্বপ্ন পুরণ হলো না ভৈরবের আট যুবকের। গত মঙ্গলবার লিবিয়ায় ২৬ বাংলাদেশিসহ ৩০ জনকে গুলি করে হত্যা করেছে স্থানীয় এক মানবপাচারকারীর পরিবারের সদস্যরা। এ ঘটনায় ভৈরব উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ৫ জন নিহত হয়েছেন বলে তাদের নাম-পরিচয় জানা গেছে।
নিহতরা হলেন, কিশোরগঞ্জের ভৈরবের রাজন, শাকিল, সাকিব ও সোহাগ, রসুলপুরের আকাশ ও মো. আলী।
ভৈরবের শম্ভপুর গ্রামের মো. জানু মিয়া (পেটে গুলিবিদ্ধ), ভৈরবের জগন্নাথপুর গ্রামের মো. সজল মিয়া ( মওটুপীর সোহাগ আহমেদ (এরা সবাই ত্রিপোলি মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসাধীন রয়েছেন
লিবিয়ায় নিহত আকাশের বড় ভাই মোবারক জানান, দেড় বছর আগে পরিবারের ভরপোষণের জন্য লিবিয়ায় যায় তার ভাই। সেখানে কাজ করার সময়ে ভৈরবের শ্রীনগর গ্রামের এক দালাল তানজীরের মাধ্যমে লিবিয়ার বেনজি হতে ত্রিপুলি হয়ে ইতালি যাওয়ার জন্য কথাবার্তা হয়। তারা ইতালিতে পৌঁছনোর পর তিন-চার লাখ টাকা পরিশোধ করতে হবে।
তিনি বলেন, ইতালির উদ্দেশ্যে রওনা দেয়ার কিছু দিন পর তাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করতে পারেনি। হঠাৎ ২৭ মে সন্ধ্যায় ইমুতে একটি ভয়েস মেসেজ আসে। সেখানে জানতে পারেন তার ভাই বলছে ‘আমাকে বাঁচাও, আমাকে মেরে ফেলবে’। পাচারকারীরা আকাশের কাছে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করছে। যদি না দেয় তাহলে তাদের মেরে ফেলবে। এরপর থেকে আর তাদের কোনো খোঁজ মেলেনি। বাংলাদেশ সরকারের কাছে তার দাবি শেষবারের মতো যেন তার ছোট ভাইয়ের মুখটা দেখতে পারে সেই ব্যবস্থা করার দাবি জানান তিনি।
নিহত সোহাগের বাবা আব্দুল আলী জানান, এক বছর আগে লিবিয়ায় যান তার ছেলে। সেখানে কয়েকমাস থাকার পর ভৈরবের শ্রীনগর গ্রামের পূর্বপাড়ার সোনা মিয়া ছেলে তানজীরের মাধ্যমে ইতালি যাওয়ার জন্য তিন লাখ টাকার মাধ্যমে চুক্তি করে। ইতালিতে পৌঁছানোর পর টাকা পরিশোধ করতে হবে। তারপর থেকে তার ছেলের আর খোঁজ মেলেনি। দেশের কিছু দালালের খপ্পরে পড়ে ইতালিতে যাওয়ার জন্য জীবন বাজি রেখে ডাঙ্গি পাড়ি দেয়। কিন্তু তাদের জিম্মি করে তাদের পরিবারের কাছে মোটা অংকের টাকা দাবি করে তাদের মারধোর করে।
ভৈরব থানার ওসি জানান, লিবিয়ায় মানব পাচারকারীদের গুলিতে নিহত ২৪ বাংলাদেশির মধ্যে ভৈরবের ৬জনের নাম জানা গেছে। আমরা তাদের নামের তালিকা সংগ্রহ করে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। পরবর্তীতে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী প্রদক্ষেপ নেবেন বলে তিনি জানান।